সাতটি মসজিদ বন্ধের পাশাপাশি তুরস্কের অর্থায়নে পরিচালত ৬০ ইমাম ও তাদের পরিবারকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে অস্ট্রিয়া।
ডেস্ক রিপোর্ট : অস্ট্রিয়া বলেছে, তারা সেদেশের ৭টি মসজিদ এবং বিদেশের অর্থায়নে পরিচালিত বেশ কিছু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছে। খবর-বিবিসি বাংলা
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ বলছেন, এ পদক্ষেপ হচ্ছে 'রাজনৈতিক ইসলামের' ওপর এক ক্র্যাকডাউন। মি. কুর্জ আরো বলেন, অস্ট্রিয়ায় কোন 'সমান্তরাল সমাজ', রাজনৈতিক ইসলাম এবং উগ্রপন্থায় দীক্ষিত হবার প্রবণতার জায়গা নেই।
যে মসজিদগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে বলে বলা হয়েছে তার মাধ্যে তিনটিই রাজধানী ভিয়েনাতে। এ ছাড়া সরকার 'আরব ধর্মীয় কমিউনিটি' নামে একটি সংগঠন ভেঙে দেবার পদক্ষেপ নিয়েছে। অস্ট্রিয়ান কর্তৃপক্ষ সেদেশে আই জি জি ও নামে একটি মুসলিম সংগঠনের সাথে মিলে কাজ করছিল -যা দিয়ে তারা উগ্র ইসলামপন্থী বা জাতীয়তাবাদী যোগাযোগ আছে এমন মসজিদ বা ইমামদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়। অস্ট্রিয়ার কিছু মসজিদের সাথে তুরস্কের জাতীয়তাবাদীদের সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করা হয়।
এপ্রিল মাসে এমন একটি ভিডিও বের হয় যাতে দেখা যাচ্ছে যে স্কুলের বাচ্চারা তুরস্কের সেনার পোশাক পরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার গালিপোলির যুদ্ধ নিয়ে একটি নাটকের দৃশ্যে অভিনয় করছে। এর ছবি ফাঁস হওয়ার পর তা অস্ট্রিয়ায় তীব্র বিতর্ক তৈরি করে। এই স্কুলটি উগ্র তুর্কী জাতীয়তাবাদী গ্রুপ গ্রে উলভস দিয়ে পরিচালিত বলে মনে করা যায় - যার বিভিন্ন দেশে শাখা রয়েছে।
অস্ট্রিয়ান সরকার বলছে দেশটির ২৬০ জন ইমামের মধ্যে ৬০ জনের ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে - যার ৪০ জন এআইটিবি নামে তুর্কী সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি মুসলিম গ্রুপের সদস্য।
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন টুইটারে এর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, অস্ট্রিয়ার উদ্যোগে ইসলাম-বিদ্বেষ, বৈষম্য এবং বর্ণবাদের প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি অভিযোগ করেন - ভিয়েনা মুসলিম জনগোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে সস্তা রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইছে।
অস্ট্রিয়ায় নির্বাচনের সময় মি. কুর্জের প্রচারাভিযানে অভিবাসন এবং মুসলিমদের মূল সমাজের সাথে মুসলিমদের সংযুক্তির বিষয়টি ব্যাপক প্রাধান্য পায়।
অস্ট্রিয়ায় এখন যে কট্টর দক্ষিণপন্থী জোট সরকার ক্ষমতায়, তারা নির্বাচনে জিতেছিল অভিবাসন এবং রাজনৈতিক ইসলামের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার কথা বলে।
প্রায় নব্বুই লাখ মানুষের দেশ অস্ট্রিয়ায় মুসলিমের সংখ্যা ছয় লাখ। এদের বেশিরভাগই তুরস্ক থেকে আসা অভিবাসী বা তুর্কীদের বংশধর।
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান কুর্জ যখন এর আগে মন্ত্রী ছিলেন, তখন অনেক ইসলাম-বিরোধী আইন করেছিলেন।
এবার তিনি আরও একধাপ এগিয়ে সাতটি মসজিদ এবং প্রায় চল্লিশ জনের মতো ইমামকে বহিস্কারের ঘোষণা দিলেন। ভিয়েনায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, অস্ট্রিয়ায় পাশাপাশি দুটি ভিন্ন ধারার সমাজ চলতে পারে না।
মি. কুর্জ আরো চান যে তুরস্কের ইইউ সদস্যপদ পাবার আলোচনা যেন ভেঙে দেয়া হয় - যার কারণে তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ক্রুদ্ধ হন।