লাইফস্টাইল ডেস্ক : রমজানের শুরুতে অনেক উৎসাহ আর এনার্জি থাকলেও সময়ের সাথে সাথে ভাটা তাতে পড়বেই। টানা সিয়াম সাধনায় ক্লান্ত হয়ে পড়ে শরীর, অন্যদিকে আসন্ন ঈদের প্রস্তুতি তো আছেই। সব মিলিয়ে রান্না করাটাই একসময়ে হয়ে দাঁড়ায় খুবই কষ্টকর।
আজ তাই নিয়ে এসেছি এমন সহজ কিছু রেসিপি, যেগুলো সেহেরিতে ঝটপট তৈরি করে নেয়া সম্ভব। তালিকায় ভাতের সাথে খাবার মত ডিশ যেমন আছে, তেমনি আছে ভাতের বিকল্প খাবারও। থাকছে ১০ মিনিটে পেরি পেরি চিকেন থেকে ফলাহার তৈরি পর্যন্ত ৭ রকমের সুস্বাদু রেসিপি। যারা একা থাকেন কিংবা ভালো রান্না করতে জানেন না, তারাও খুব সহজে এগুলো রান্না করে নিতে পারবেন। রান্নার আয়োজনও খুব সামান্য, অনেক কিছু গোছাতে হবে না বা প্রচুর থালাবাসনও এঁটো হবে না।
ডিম পোঁচ কারি
কয়েকটি ডিম পোঁচ করে নিন। এবার কড়াইতে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি দিন। হলুদ, লবণ ও মরিচ গুঁড়ো দিয়ে নাড়ুন। অল্প পানি দিন, সাথে অল্প একটু টমেটো সস। মশলা মিনিট খানেক কষিয়ে নিন। এরপর ডিম গুলো দিয়ে দিন। ২/৩ মিনিট রান্না করে অল্প জিরা গুঁড়ো ও ধনেপাতা ছিটিয়ে নামিয়ে নিন।
পেরি পেরি চিকেন
অবাক হচ্ছেন? বাস্তবেই দশ মিনিটে পেরি পেরি চিকেন রান্না সম্ভব। বাজারে রেডিমেড পেরি পেরি সস কিনতে পাওয়া যায়। পছন্দের ফ্লেভার কিনে আনুন। রাতে ঘুমাবার সময় মুরগীর হাড় ছাড়া মাংসে এই সস মেখে রাখুন। আর কিছুই দিতে হবে না, কেবল সস দেবেন। সেহেরিতে অল্প তেলে প্যানে শ্যালো ফ্রাই করে নিন। সাথে কেটে নিন কিছু ফ্রেশ সালাদ। দশ মিনিটেই প্রস্তুত পেরি পেরি চিকেন দিয়ে সুস্বাদু সেহেরি। একই সস দিয়ে মাছও করতে পারেন।
প্রেসার কুকার/ রাইস কুকার খিচুড়ি
চাল ও পছন্দের ডাল মিলিয়ে ১ কাপ নিন। অল্প পেঁয়াজ কুচি, সামান্য হলুদ, লবণ ও ধনে গুঁড়া ও ঘি/তেল দিয়ে মেখে নিন। সাথে যোগ করুন দেড় কাপ গরম পানি। ফ্রিজে রান্না করা মুরগী বা গরুর মাংসের তরকারি থাকলে সেটাও দিয়ে দিতে পারেন। এবার প্রেসার কুকারের মুখ আটকে বেশি আঁচে রাখুন। একটি সিটি হলে বন্ধ করে দিন। ৮ মিনিট পর মুখ খুলে খিচুড়ি নেড়ে নিন ও পরিবেশন করুন। রাইস কুকার হলে একইভাবে মেখে ভাত রান্নার নিয়মেই রান্না করে নিন। ইচ্ছে হলে ডাল বাদ দিয়ে কেবল চাল ও মাংস দিয়েও রান্না করতে পারেন।
ডাল/ডিম ভর্তা
ডাল কিংবা ডিম ভর্তা তৈরি হতে আলু ভর্তার মত অনেক সময় লাগে না। ডাল ধুয়ে অল্প একটু পানি ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ বসিয়ে দিন। ঢাকনা দিয়ে দিলে দ্রুত রান্না হবে। এই ফাঁকে পেঁয়াজ-মরিচ-ধনে পাতা কেটে নিন। ডিমও সেদ্ধ দিয়ে দিতে পারেন অন্য চুলায়। সেদ্ধ হয়ে গেলে সব উপকরণের সাথে সরিষার তেল যোগ করে মেখে নিন। ইচ্ছে হলে ডাল ও ডিম একসাথে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন, কিংবা ব্যবহার করতে পারেন গাওয়া ঘি। একই ভাবে বেগুন পুড়িয়েও ভর্তা করে নিতে পারেন।
মাছ ভাজা
রাতে ঘুমাতে যাবার সময়ে ফ্রিজ থেকে মাছ বের করে রাখুন, সেহেরিতে উঠে দেখবেন ডিফ্রস্ট হয়ে গেছে। মাছ আগেই ধুয়ে প্যাকেট করলে ধোয়ার সমস্যাও হবে না। কেবল হলুদ-মরিচ-লবণ মেখে নেবেন, অল্প তেলে শ্যালো ফ্রাই করে নেবেন মাছের টুকরোগুলো। ইচ্ছে হলে বেরেস্তা ও কাঁচামরিচ ছিটিয়ে দিতে পারেন।
ভাতের ফ্রায়েড রাইস
আগের দিনের ভাত রয়ে গেছে? প্যানে তেল দিয়ে ২/১ টি ডিম ঝুরি করে নিন। ঘরে সসেজ থাকলে ভেজে নিন। এবার একই প্যানে মাখন দিলে অল্প একটু রসুন কুচি দিন। একটু ভেজে নিয়ে রাতে ভাতগুলো দিয়ে দিন। সয়াসস ও গোলমরিচ গুঁড়ো যোগ করুন, ভাজতে থাকুন। ডিম ও সসেস যোগ করুন। ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে নিন।
ফলাহার
মশলাদার কিছু খেতেই মন চাইছে না? তাহলে সেহেরিতে চলতে পারে ফলাহার। নানান রকম ফলাহারের আয়োজন করতে পারেন আপনি মাত্র ১০ মিনিটে। দুধ-ভাতের সাথে আম বা কলা মেখে খেতে পারেন, সাথে এক চিমটি লবণ যোগ করলে স্বাদ আরও বাড়বে। এছাড়াও খেতে পারেন চিঁড়া , দই ও কলা। যারা ডায়েট করছেন, তারা টক দইও খেতে পারেন।
রমজানে সবচাইতে জরুরী সুস্থ থাকা। রান্নায় সময় বাঁচুক, ইবাদত ও বিশ্রামে সময় কাটুক বেশি বেশি।