প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া সংবর্ধনায় মানুষের মনে ঘৃণার জন্ম হয়েছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আওয়ামী লীগ নেতাদের বলেছেন, আপনারা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে রিপোর্ট নিয়ে দেখুন, জীবন যন্ত্রণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে গণসংবর্ধনা নিলেন তাতে মানুষের মধ্যে কী প্রতিফলন হয়েছে।
রোববার (২২ জুলাই) নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী বলেন, বিশ্বের বরেণ্য অনেক নেতাকে উন্নয়ন করতে দেখেছি। কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে স্বদলীয় চামচাদের দিয়ে সারাদেশের মানুষের পকেট কেটে শহরবাসীকে এক ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা দিয়ে যে সংবর্ধনা দেওয়া হলো, এটার জন্য মানুষের হৃদয়ে ঘৃণার সঞ্চার হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের বলবো, আপনারা দেখার চেষ্টা করুন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বলুন, তারা যেন সত্যিকার অর্থে সার্ভে করে সঠিক রিপোর্টটা প্রধানমন্ত্রীকে দেয়। এই যে জীবন যন্ত্রণা দিয়ে তিনি গণসংবর্ধনা নিলেন তাতে মানুষের মধ্যে কী প্রতিফলন হয়েছে।
‘দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আমরা উন্নয়ন দেখছি, বিশুদ্ধ সোনা কিভাবে ধাতুতে পরিণত হয়, এটা যদি প্রধানমন্ত্রী বলতেন তাহলে আমরা খুব খুশী হতাম। রিজার্ভ ব্যাংকের ৮শ’ কোটি টাকা হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, অর্থমন্ত্রী পদত্যাগও করেন না। এগুলো তিনি কিছু বলেননি। শুধু অনর্গল মিথ্যা কথা যেটা একেবারেই আওয়ামী লীগ সরকারের স্বভাবধর্ম তিনি সেটাই বলেছেন। এখানে নতুন কিছু দেখিনি।
রিজভী বলেনে, দেখুন কি অবাক করা কাণ্ড, বড় পুকুরিয়ায় ১ লাখ ৪২ হাজার টন কয়লা উধাও। এই যে গায়েব, চারিদিকে যত গায়েবের উন্নয়ন, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি।
সবকিছুও ওপর সেন্সরশিপ আছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ফ্যাসিবাদেও তো গণতন্ত্র থাকে না। আমার কথা বলার ক্ষেত্রে, প্রচারের ক্ষেত্রে কত সেন্সরশিপ আমরা দেখছি। কিন্তু একজনের কথা বলার ক্ষেত্রে কোনো সেন্সরশিপ নেই। তার একক ক্ষমতা, অবাধ ক্ষমতা, যা কিছু ইচ্ছা বলতে পারেন। অনেক কিছু বলেছেন তিনি। ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু রাস্তা দিয়ে যখন হাঁটি মানুষের চেহারা দেখে ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন তো আমরা দেখি না।
তিনি বলেন, ভাগ্যের পরিবর্তন তিনি ঘটিয়েছেন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ নানা লীগের। এদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। পদ্মাসেতু থেকে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টের নামে এক টাকাকে ১শ’ টাকায় প্রবর্তন করে অবাধ ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে! সেই ভাগ্যের পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত দেখছি, মালয়েশিয়াতে তৈরি হয়েছে ক্ষমতাসীনদের নানা ধরনের ভবন। আমরা তো এভাবে ভাগ্যের পরিবর্তন দেখছি। আমরা উন্নয়ন দেখছি কি করে ২২ ক্যারেটের সোনা ১৮ ক্যারেটে পরিণত হয়।
তিনি বলেন, দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই করেছে। এটার জন্য উনার (শেখ হাসিনা) একটা গণসংবর্ধনা প্রয়োজন। সেটা এখনও কেন তারা দিল না। এটাও হয়তো তিনি পাবেন, কিছুদিনের মধ্যেই।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান, চেয়ারপারেসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।